" হারানো কলম কেউ একদিন টেবিলে তুলবে
পায়ে পায়ে এই আগমন তুমি বুঝতে পারবেনা
তখনও তুমি দুধ ভরে নিতে চাও শরীরে
কিছুতেই বুঝোনা হাওয়া আটকায় না কোন আঙটায় "
( হারানো কলম / স্বদেশ সেন )
কলম হারায় । কলমের আঁচড় হারায়না । কাগজে রেখে যায় তার স্থায়ী চিহ্ন।এই চিহ্ন বা লিখনগুলো যদি বাক্যের একটি সফল পংক্তিমালা নির্মান করতে পারে , তবে তা কাগজের বুক থেকে পৌঁছে যায় মানুষের হৃদয়ে হৃদয়ে । দাগ কেটে যায়।
স্রষ্টা সৃষ্টি করেন আপন খেয়ালে , নিজের মতো করে । এই সৃষ্টি যখন সফল ও সম্পূর্ণ হয়ে যায় তখন তা আর স্রষ্টার নিজস্ব থাকেনা । স্রষ্টাকে অতিক্রম করে সকলের হয়ে যায়। এটাই সৃষ্টির সার্থকতা , স্রষ্টার সাফল্য।
চলে গেলেন এক কলম কারিগর। একজন আত্মমগ্ন কবি। কাব্যস্রষ্টা । স্বদেশ সেন।তাঁর কলমও কি হারিয়ে গেল? না সেটা হারায়নি। বেঁচে আছে তাঁর কাগজ-কলমের কারুকাজগুলো। বেঁচে থাকবে বাংলাসাহিত্যের ইতিহাসে এক বিশিষ্ট স্থান জুড়ে।
" ভরা কাগজকে ভাবো একটা প্রপাত যেমন হয়
সেখানে একটা মাত্রাময় দাগ পড়বে
আনারস কেন্দ্রের মতো
ঘাস ফলের কাগজ
সে তো ঝরবে বলেই ঝর্ণা বলেই বয়ে যায়
সে তো দাগবে বলেই দামী
আভাস থেকে অন্ত দেখতে দেখতে দেখিয়ে দেওয়া । "
( ভরা কাগজ / স্বদেশ সেন )
এই ভরা কাগজের প্রপাতে অজস্র মাত্রাময় দাগ রেখে চলে গেলেন তিনি ।
পাঠকের অন্তরে এবং মুখে মুখে ফিরবে তাঁর কবিতাগুলো---সপ্রাণ। কিন্তু তিনি নিজে চলে গেছেন নশ্বর এই পৃথিবী ছেড়ে এক অনন্ত অবিনশ্বরে। যাবার আগে এই নশ্বর পৃথিবীর জন্য রেখে গেছেন কিছু অবিনশ্বর কাব্যশৈলি।খুব সরব এক কবিতার খাতা ফেলে উঠে চলে গেলেন,এক না লেখার দেশে ।যেখানে আর কোন কবিতার খাতায় আঁচড় কাটবেনা তারঁ এই কলমটি।
যেমন--" হাওয়া আটকায় না কোন আঙটায় '--তেমনি জীবনও চিরকাল আটকে থাকেনা কোন
নশ্বর দেহে।একদিন হুট করে নিভে যায় জীবনপ্রদীপের শেষ সলতেটুকু। অনাকাঙ্খিত ,
কিন্তু অবধারিত।যে যায় সেও যেতে চায়না । এই জাগতিক মায়াজাল ছিন্ন করে
স্বেচ্ছায় -হাসিমুখে চলে যাওয়া সহজ নয়।আর আশপাশের মানুষ , প্রিয়জন , চেনা
পৃথিবী হাহাকার করে বলে যেওনা, যেওনা, যেওনা।তবুতো যেতে হয়। এটাই নিয়ম।আর
যাবার আগেই পৃথিবীতে রেখে যায় নিজের কিছু না কিছু চিহ্ন ,স্বাক্ষর ।
উত্তরাধিকার।
কেন লেখে মানুষ? কিভাবে লেখে? মানুষ সারাক্ষণ কথা বলে নিজের সাথেই।প্রশ্ন
করে ,উত্তর দেয়।পৌঁছায় কোন না কোন সিদ্ধান্তে। সরল অথবা জটিল।আর
নিজেকে বলা এই কথাগুলো , এই সিদ্ধান্তগুলোই সাহিত্য হয়ে ওঠে যখন অন্যের
কাছে তুলে ধরতে পারে লেখনির মাধ্যমে।কেউ কেউ পারে । সবাই নয়।যুগে যুগে
মানুষ এই আপন খেয়ালের , অনুভবের কথা লিখে রেখেছে শিলালিপিতে , প্যাপিরাসে,
ভূর্জপত্রে ।এই সাহিত্যেরও আবার নানা ডালপালা।তার মাঝে সব থেকে প্রাচীন সব
থেকে শিল্পিত মাধ্যম হলো কবিতা।শিল্পিত এবং জনপ্রিয় ।বিবর্তনের পথ ধরে
তারও আবার ভিন্ন রূপ। ভিন্ন মেজাজ।
কবি স্বদেশ সেন খুব অবলীলায় নিজের লেখনীকে করতে পেরেছেন সর্বজনগ্রাহ্য এবং সেইসাথে অতিক্রম করে গেছেন নিজের সময়কেও।তিনি যেন অনাগত সময়ের এক অগ্রদূতের মতোই সমসাময়িক লেখনীধারা থেকে বেরিয়ে নিজের লেখাতে প্রবর্তন করেছেন এক ভিন্ন এবং নতুন ধারার ।
কবিতা দু'ভাবেই লেখা হয়। মূর্ত অথবা বিমূর্ত। কেউ কেউ নিজের চারপাশে খুব
বিমুর্ত এক আবহের সৃষ্টি করে নিয়ে লিখতে পারেন বা লিখেন।চেনা জগতের অনেক
বাইরের কথা।পাঠক তার নাগাল বা স্পর্শ পায়না খুব সহজে।আবার কেউ লিখেন খুব
জীবনঘনিষ্ট কিছু পক্তিমালা যা পাঠকচিত্তের খুব কাছাকাছি।পাঠক চাইলেই
স্পর্শ করতে পারে, ঢুকে পড়তে পারে কবিতার আদ্যোপান্ত শরীরে। একজন বিমুগ্ধ
পাঠক হিসেবে স্বদেশ সেন আমার কাছে শেষোক্তদের দলে।তাঁর কবিতাগুলো পড়লে মনে
হয় এই কবিতার কোথাও না কোথাও আমিও আছি-- আছে আমার চেনা পৃথিবীর
খন্ডাংশগুলো।খুব চেনা এক জগতের কথা বারবার উঠে এসেছে তাঁর লেখনিতে।যে পড়বে
তার কাছেই এমন মনে হবে। ভাবের, প্রকাশের এই সার্বজনীনতাকে অত্যন্ত সফলভাবে
পরিস্ফুট করতে পেরেছেন তিনি।
কবিতাতো জীবনেরই কথা । খুব শিল্পিত অলংকারে ।রোম্যান্টিক বাতাবরনে
।কবিতা উঠে আসে যাপিত জীবনের দোলাচল থেকে।এক সুগভীর , সুতীব্র জীবনবোধই
কবিতার প্রেষণা।
স্বদেশ সেনের কবিতা একদিকে যেমন
তীব্র জীবনবোধের ইংগিত , তেমনি নিপুন শব্দবিন্যাসের এক সার্থক
প্রয়াস।কবিতাগুলো বিশিষ্ট হয়ে উঠে আঙ্গিক নির্বাচনের মুন্সিয়ানায় , যথাযথ
শব্দ এবং বাক্যের সফল প্রয়োগে ; পাঠককে টেনে ধরে রাখতে সক্ষম হয় কবিতার
ভেতরে।
" জলপ্রপাত দেখতে গিয়ে কেমন ক'রে ছাড়াছাড়ি হলো
অথচ আমি বোঁটার উপর আঁকশির মতো কামড়ে ছিলাম
হলুদ কোথায় আটকানো খশ্টে মাছির একটা স্টিল ।
দাম দাম শব্দ , ব্যাকফায়ার , দাঁড়ালো টি . এন্ড কো-র ম্যাক
মাঠে গরু ঝুম বিস্ফোরণের মতো দৌঁড়
দূরে গ্রাম ত্রিয়াং
মৃৎভান্ডের মতো আমি ডাক দেই , সামনে স্লেট পাথর টিলা
জল্লাদ ফিরিয়ে দিল নামের বদলা নাম আমার লালায় ভেজা
কুর্চিপাতায় কুড়িয়ে নিল খাস ভৃত্য ।"
( জলপ্রপাত / স্বদেশ সেন )
কী
অদ্ভুত আর তীব্র উচ্চারণ ! " কেমন ক'রে ছাড়াছাড়ি হলো/ অথচ আমি বোঁটার উপর
আঁকশির মতো কামড়ে ছিলাম"--- এই কথাগুলো বুকের ভেতরে কী প্রচন্ড এক আলোড়ন
তুলে ফেলে নিমেষেই।এইতো কবিতা! এটাইতো কবিতা ! আর এই যে বাক্যের এক নতুন ধারার বিন্যাস, ' মৃৎভান্ডের মতো আমি ডাক দেই ' অথবা 'জল্লাদ ফিরিয়ে দিল নামের বদলা নাম আমার লালায় ভেজা
কুর্চিপাতায় কুড়িয়ে নিল খাস ভৃত্য ।' এভাবে এই বাক্যটাও দেখি 'খশ্টে মাছির একটা স্টিল ' । কী অসাধারণ বাক্য বিন্যাস ! তাঁর সমসাময়িক কবিদের থেকে সম্পূর্ণই আলাদা । নতুন এবং অভিনব।
" গড়া ও বানানো নিয়ে কথা বলো
তীব্র হও পুরনো হ'য়োনা ।
নিজেকে নিজের সঙ্গে গুণ করো
অন্তত আড়াই গুণ করো
টেকনিক্যাল কুহকের মতো ।
( নদীর মানে / স্বদেশ সেন )
'টেকনিক্যাল কুহক ' ! অভিনব এক যুথবদ্ধতা। ' তীব্র হও পুরনো হ'য়োনা ' । উনিও নিজে এই ছিলেন । তীব্র কিন্তু কখনো পুরনো নয়।
"আপেল ঘুমিয়ে আছে ওকে তুমি দাঁত দিয়ে জাগাও
নতুন ছালের নীচে রক্ত চেপে খেলা করে দাঁত
সহজে, আপন মনে চরাচর শান্ত দেখে খুন হয়ে যায়
আপেল ফুলের দিন শেষ হয়, বেড়ে ওঠে নির্বিকার দাঁত
- -----------------------------------------------
ওকে তুমি খুন করো, টুকরো করো, লেই করে আনো
চিহ্নহীন করে ভাঙো - কাজে লাগো ফলিক অ্যাসিড
রেশম কীটের মতো আত্মপ্রতিকৃতি ভাঙো আর সুস্থ হও
আপেল ঘুমিয়ে আছে ভোরবেলা - ওকে তুমি দাঁত দিয়ে জাগাও।
(আপেল ঘুমিয়ে আছে, স্বদেশ সেন)
'রেশম কীটের মতো আত্মপ্রতিকৃতি ভাঙো আর সুস্থ হও' । অসাধারণ এক উপমা।
স্বদেশ সেনের কবিতায় ভাব, উপমা এবং উচ্চারণের ভঙ্গি বরাবরই লক্ষ্যনীয়। দেখি, এই শব্দ নিয়ে তিনি নিজে কি বলেছেন ------------
" শব্দের পাড়ায় আমি মাঝে মাঝে যাই চরিতার্থ হতে
ফিরে আসি চরিত্র হারিয়ে একা লবংগের মতো
মুখটাকে বুক পকেটে গুঁজে
অন্ধকারে
গাছের মতন খুব কম্প ওঠে ভেতরে ভেতরে
পুরনো বেলার গন্ধ
সাবেরিয়া রে , কাহে মারো নজরিয়া , কাহে মারো
আস্তে কড়া নাড়ি , বলি , ময়না , সুখ কি কোথাও নেই ? "
( শব্দের পাড়ায় / স্বদেশ সেন )
শব্দের বিকারই তার গান
ফুটবে বলে ফুল এখন বিরতিতে আছে
সচেতন হ'য়ে ফুটবে
গন্ধনাদ হ'য়ে
আমাদের সেই শব্দ বিরতিতে রাখো
প্রাক- বিবাহ থেকে বিবাহকে ভাঁজ করে তোল
ভোজ্য যেমন ভাজা হয় পাশ ফিরে ফিরে
কথা বলার ব্যাপারই যেমন বলে যাওয়া
প্রকৃত সেপটিপিন বন্ধ বলেই খুলবে
বানানকে একবার বাঁধালেই শব্দ
শব্দ যদি ওড়েটাই বানান।
( শব্দের বিকার / স্বদেশ সেন )
শব্দ নিয়ে উনি নিজে খেলেছেন এক অনবদ্য খেলা । পুরনো শব্দবিন্যাসের ধারা ভেঙ্গে নির্মান করে নিয়েছেন এক নতুন বিন্যাসরীতি। এখানেই তাঁর স্বকীয়তা।
তাঁর কবিতায় উঠে এসেছে মানবিক হাহাকারগুলোও খুব সাবলীল ভাবে ।
যখন স্বদেশ সেন লিখেন,-------
"---------হা-স্বপ্নে কেঁদে ডেকেছি কোথায় আমার মা
আমি ভয় পাই ঝড়ে, ম্যান্ডোলিনে, মেঘের পেছনে মেঘ
যে কোন পথের পাশে ঝনৎকার............"
( উপত্যকা থেকে নেমে / স্বদেশ সেন)
এই পক্তিগুলো পড়তেই বুকের মাঝখানটায় কেমন যেন এক শিরশিরানি ! আমাদের সবার বুকের ভেতরে বেঁচে থাকে এক শিশু । যে --এমনকি বৃদ্ধবয়সেও
ভুলতে পারেনা মায়ের চাহিদা।যখনই মুখোমুখি হয় জীবনের যেকোন প্রতিকূলতার ,
খুঁজে মায়ের আঁচলের নির্ভরতার ছায়া।যন্ত্রণায়। যুদ্ধে। তাঁর এই পক্তিমালায় সেই শিশুটি জেগে উঠে নতুন করে । মনে হয় এতো আমারই কথা।
তিনি অনায়াসে লিখে গেছেন চারপাশের জীবনযাপনের খুব
স্বাভাবিক চিরাচরিত দৃশ্যাবলি। যাপিত জীবনের চাহিদা-হতাশা ।এবং ক্ষোভ।
" আমাকে একটা কাজ দাও, যে কোন, যেমন তেমন একটা কাজ
মাইরি-মেরি করে বলছি
একটা কাজ দাও
এই নিত্যদিনের বানভাসি আর ভালো লাগছেনা ।
----------------------------------------------------------------------------------------------
শেষে কি জ্বালাবো তোমাদের সাজানো বাগান,
টেরিন, মেহগিনি, ফুলবাড়ি
আমি কি শেষপর্যন্ত জ্বলতে জ্বলতে দু'চোখের চামড়া খুইয়ে
তোমাদের অন্দর মহলে ঢুকে পড়বো?
( শেষ পর্যন্ত / স্বদেশ সেন)
" ধন্য বল ভাতের উপরে নুন
কোনদিন ফুরোবেনা ভাতের জন্য নুনের কাজ
একবিংশ শতকে এখনও ভাত নিয়ে কাজ করতে হয়
একটু মজ্জার ঝাল একটু লজ্জার টক নিয়ে
কত ভাত পায়নি আশাপুতুল মি-মি "
( অত্যন্ত ভাস্কর / স্বদেশ সেন )
কবিতা যে শুধু হতাশার অথবা বিরহের কথা বলে তাতো নয়।কবিতা স্বপ্নের কথাও
বলে নবজন্মের কথা। নতুন করে বেঁচে ওঠার কথা। আশ্বাস ; ফিনিক্সের মতো
ছাই-ভস্ম থেকে উঠে এসে সোনালি ডানার ভরে নতুন উড়ালের ।
" না হয় একটা ফুল শুকিয়েছে , দেখিসনি বাগানে অন্যান্য
দৃষ্টরজা ফুল
না হয় একটা তারা খসে গেছে ............এমন যৌবন সেও তো
নিঃশ্বাস ফেলে চলে যায়
পাঁজরায় কোথায় ফুটেছে একটা কাঁটা না বরফকুচি
জন্মনাড়ীতে উপমা হয়ে ঊড়ে বসল একটা কাঠঠোকরা
দীপ জ্বালতে একটা ফোস্কা যদি পড়েই
তাই বলে ঘর আঁধার করে চৌকাঠে বসবে? "
(পায়ে পায়ে / স্বদেশ সেন )
হতাশার মাঝে তিনি বারবার খুঁজেছেন নতুন আশা ; ব্যর্থতার বিকল্প ।
"আমি সূর্য ডুবলে খুঁজি কোথাও এক টুকরো খাদির চাঁদ
চাঁদ ডুবলে এককণা খনিজ তারা ।
আমি ঈশ্বরের কাছে গচ্ছিত রেখে যেতে চাই
জল মরু ও সীমূম
পাপ ঈর্ষা পুরীষ
পত্রমোচীবনের মতো মনোনিবেশ থেকে পালিয়ে
কাউলের নিঃসঙ্গ ঘোড়া যেমন নেফা থেকে
আমি সেই উপত্যকা থেকে নেমে
একবার উরুত বাজিয়ে তরানা গাইতে চাই ।"
( উপত্যকা থেকে নেমে / স্বদেশ সেন)
এই যে কথাগুলো ----" না হয় একটা ফুল শুকিয়েছে , দেখিসনি বাগানে অন্যান্য
দৃষ্টরজা ফুল"
অথবা
"আমি সূর্য ডুবলে খুঁজি কোথাও এক টুকরো খাদির চাঁদ
চাঁদ ডুবলে এককণা খনিজ তারা ।"
এমন কথা যিনি লিখেন,তিনি কক্ষনো হতাশাবাদীদের দলে পড়েননা ।
তিনি জীবনের দৈন্যগুলোর কথাও বলেন, আবার এই অপ্রাপ্তি থেকে বেরিয়ে নতুন আলোকপথের অনুসন্ধানেরও ইংগিত দেন।
কেমন ছিলেন কবি স্বদেশ সেন? ব্যক্তি অথবা কবি হিসেবে?
কবি হিসেবে তাঁর যে পরিচিতি সেটাতো তাঁর কবিতা পাঠকেরাই
বিচার বা মূল্যায়ন করবেন।
তবে একজন কবিতা পাঠক হিসেবে এটুকু বলতে পারি
স্বদেশ সেনের কবিতা পড়তে গিয়ে আমার বিমুগ্ধ পাঠ বিঘ্নিত হয়নি কখনো । বরং বিস্মিত এবং আপ্লুত হয়েছি বারবার তাঁর লেখনীর নৈপুন্যে ।
ব্যক্তি
স্বদেশ সেনের সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি ,
তিনি ছিলেন নিজের ভেতরে বাস
করা একজন আত্মমগ্ন মানুষ।প্রচারবিমুখ। কোন ধরণের হৈচৈয়ের মাঝে না থাকা
একজন। আত্মমগ্ন কিন্তু উদাসীন নন। নিজের চারপাশকে খুব ভালভাবেই দেখেছেন ,
পর্যালোচনা বা পর্যবেক্ষণ করেছেন নিবিষ্ট আন্তরিকতায়।যার পরিচয় পাওয়া
যায় তাঁর লেখনিতে।এ ধরনের লেখার অপরিসীম মূল্য রয়েছে নিমগ্ন পাঠকের কাছে।
বাংলা কবিতা যতদিন বেঁচে থাকবে। স্বদেশ সেনও বেঁচে থাকবেন । বেঁচে থাকবে
তাঁর কলম।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------