শনিবার, ১২ জুলাই, ২০১৪

যে নগরী ঘুমায়না (City That Does Not Sleep)


আকাশে কেউ ঘুমায়না  । কেউনা, কেউ নয়।
 ঘুমায়না কেউ ।

 চাঁদের প্রাণিগুলো  ঘুরছিল আর শুঁকছিল তাদের কুটীরের চারপাশ।
 যে লোকগুলো স্বপ্ন দেখেনা তাদের কামড়ে দেবে এসে  জীবন্ত গুঁইসাপ ,
এবং ভগ্নহৃদয়ে পালিয়ে যাওয়া লোকটাকে পাওয়া যাবে রাস্তার মোড়ে তারাদের মৃদু প্রতিবাদের শান্ত তলদেশে অবিশ্বাস্য কুমিরগুলো ।


 ঘুমায়না কেউ পৃথিবীতে।কেউ নয়,কেউনা।
কেউ ঘুমায়না।

দূরের এক সমাধিতে একটি শবদেহ

পুড়ছে তিন বৎসর ধরে
  কারণ তার হাটুর নীচে একটি  গ্রামীন শুষ্ক ভূমি
এবং  যে সকালে  তারা সমাধিস্থ করেছিল ওই ছেলেটিকে কেঁদেছিল অনেক
তাকে শান্ত করার জন্য প্রয়োজন ছিল কুকুরগুলোকে ডেকে  পাঠানোর।

জীবন একটি স্বপ্ন নয়, সাবধান! সাবধান! সাবধান!
আমরা সিঁড়ি থেকে নেমে যাই ভেজামাটির স্বাদ অনুভবের জন্য
অথবা আরোহন করি বরফের ক্ষুরধার প্রান্তে মৃত ডালিয়ার কন্ঠস্বরের সাথে।

কিন্তু বিস্মরণ বলে কিছু নেই , স্বপ্নও নেই।
 অস্থিত্ব আছে মাংসের।নতুন একগুচ্ছ শিরায়
চুম্বন আমাদের মুখগুলোকে জুড়ে রাখে,

এবং  এই ব্যাথাকে যে জেনেছে সে আজীবন জেনেই যাবে
এবং  আজীবন মৃত্যুকে বহন করবে তার কাঁধে যে  ভয় পায় সে ।

একদিন
ঘোড়াগুলো বাস করতে আসবে পান্থশালায়
এবং ক্ষিপ্ত পিঁপড়েগুলো
নিজেদের নিক্ষেপ করবে  গরুর চোখে আশ্রিত হলুদ আকাশে।

একদিন
আমরা সংরক্ষিত প্রজাপতিগুলোকে দেখবো মৃতদেহ থেকে উঠে আসতে
 কিন্তু তখনও হাঁটছে  ধুসর শৈবাল এবং স্তব্দ নৌকার রাজ্যে।
আমরা দেখবো আমাদের আংটিগুলোর বিচ্ছুরণ এবং জিহ্‌বা থেকে গোলাপের ঠিকরে ওঠা।
সাবধান! সাবধান হও! সাবধান হও!

যাদের এখনো  আছে বজ্রপাত এবং নখরের চিহ্নগুলো,
এবং ওই ছেলেটি যে কাঁদে কোনদিন সেতু আবিষ্কারের গল্প
শুনেনি বলে,
অথবা ওই মৃত লোকটি যে  এখন  মালিক শুধু তার একটি জুতো এবং মাথাটার ,
আমরা অবশ্যই তাদের নিয়ে যাবো সেই দেয়ালের কাছে  যেখানে অপেক্ষায় আছে গুঁইসাপ
 এবং বিষধরেরা ,

যেখানে ভালুকের দাঁতগুলো অপেক্ষায় আছে,
 যেখানে অপেক্ষায় আছে ছেলেটির মমিকৃত হাত,
 শেষপ্রান্তে দাঁড়ায় উটের কেশরগুলো তীব্র নীল কম্পনের সাথে ।

 কেউ ঘুমাচ্ছেনা আকাশে।কেউ নয়,কেউনা।

ঘুমাচ্ছেনা কেউ ।
যদি কেউ বন্ধ করে তার চোখ
একটি চাবুক, ছেলেরা, একটি চাবুক !
খোলাচোখগুলোর  দৃশ্যচিত্র হতে দাও

এবং আগুনের যন্ত্রনাক্ত ক্ষত।
এই পৃথিবীতে কেউ ঘুমাচ্ছেনা।একজনও না,নয় একজনও ।
আমি এটা আগেই বলেছি।

কোন একজনও ঘুমাচ্ছেনা।
কিন্তু কেউ যদি রাত্রে তার মন্দিরে খুব বেশি শেঁওলার জন্ম দেয়,
 মঞ্চের চোরাদরোজাগুলো খুলে দাও সে যেন চাঁদনি দেখতে পারে
মিথ্যা পানপাত্রগুলো,বিষ,এবং রঙ্গমঞ্চের খুলি।


 Federico García Lorca










কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন