মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০১৪

আকাশ জুড়ে শুনিনু



            চাঁদ উপুড় ঢেলে দিল  মায়াবী জ্যোৎস্নার অঝোর ধারা।প্রবলসমুদ্রের ঢেঊয়ের মতো সবুজ চাঁদনীর লহর খেলে যায় নুনপোড়া ক্ষত ভিজিয়ে দিয়ে।তাই হোক। সমস্ত নুন সাগরের নুনে মিশে ঝরে যাক।

   হতাশ্বাসের নীল হুতাশনে চারপাশ পুড়িয়ে ফেলার আগেই নিজের জন্য তৈরি করে ফেলতে হয় একটি চাবুক।যেন নোনাধরা দেয়ালে  খুঁজতে নাহয় কোন হারিয়ে যাওয়া প্রতিচ্ছবি।কেবল নাম হয়ে বেঁচে থাকা কোন মুখের আদল।বাতাসে ছড়িয়ে দেওয়া আর্তনাদগুলো বুমেরাং হয়ে বারবারইতো ফিরে এসেছে।আর বাতাসের মীড়ে মীড়ে তৈরি করেছে হাহাকারের নবতর শব্দাবলি।কতোবার............................................................

                  দূরাগত জাহাজের ভেঁপু বেজে ওঠার  আগেই কেন যে এক অর্থহীন ডুবসাঁতারে মাঝসমুদ্রে পৌঁছে যাওয়া ! সেইতো সৈকতেই ফিরে আসতে হয়। কোন মানে হয়না ।অথবা এ এক প্রতিযোগিতা নিজের ছায়ার সাথে। ছায়াকে অতিক্রম  করে যাবার  বোকাদুঃসাহসিকতার এক আবেগতাড়িত লোভ।শেষপর্যন্ত ভেংচি কেটে ছায়াটাই এগিয়ে যায়। যা স্বতসিদ্ধ। স্বাভাবিক। ছায়াকে অতিক্রম করা যায়না।অনুসরণ করা যায় মাত্র।ছায়াটাও সত্যি। আপন অস্তিত্বের মতোই।আমরা ভুলে থাকি । আমরাই..........................................


          এইযে সমুদ্র আর আকাশের মাঝখানের ফাঁকের হিসেবটা, দুরত্বের উদাহরণ হয়ে আছে  যুগ যুগ ধরে --এ এক মিথ্যে উদাহরণ।আকাশ আর সমুদ্রের মতো পরস্পরের এত কাছাকাছি , পরস্পরের এত আপন আর কিছুর তুলনা চলেনা। সারাক্ষণ মুখোমুখি তাকিয়ে থাকা।আর কে পারে এমন!সময়ের পরিক্রমা শেষ হয়ে গেলে আকাশ তার সূর্য আর চাঁদকে পরম নিশ্চিন্তে রেখে দেয় সাগরের নিরাপদ কোলে।সাগর যেমন তার সব জলকণা তুলে রাখে আকাশের মেঘের ভেলায়।সবকিছু এভাবেই । সব। সব।অথচ আমরা দেখছি অন্যরকম। দেখছি দুরত্ব। খুঁজছি বিরহ। তাদের অন্তহীন মিলনের গান সহজে ধরা দেয়না আমাদের কানে।

            জলের সিঁড়ি ভেঙ্গে ভেঙ্গে  তলিয়ে যাচ্ছে মাছ। আবার ভাসছে কানকোর ঝাপটায় নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের স্বভাবগত প্রয়োজনীয়তায়।জলইতো মাছের একমাত্র বিচরণক্ষেত্র। কখনো সমতলে ,কখনো অতলে।আবার জলের বিলাসও  মাছইতো।
   কোন কোন গ্রন্থিবন্ধন এমনি----জল আর মাছের মতো । আকাশ আর সমুদ্রের মতো। এমনি কাছে অথবা দূরে।

" আকাশ জুড়ে শুনিনু ওই বাজে        তোমারি নাম----------"

কার নাম? কার?

সে শুধু সমুদ্রের।






----------------------------------------------------------------------------------------------------------------

     

২টি মন্তব্য: