রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৪

পিঞ্জরের পাখী

পাখী পেয়েছিল একটি পরিপাটি খাঁচা ; উপহার।খাঁজকাটা শিকলসমেত।পরিমিত দানাপানি।
কি করে এড়াবে দুরন্ত আকাশের দুর্বার আহ্বান?উড্ডয়নের প্রবলনেশায় পালক খসে গেল ; শিকল পেরোনো গেলনা।


মানুষ ভালবাসে পাখী । একাত্ম অনুভবে লীন হতে চায়।ভালবাসে! ঈর্ষাও কি? তারা কেবলই চেয়েছে তাদেরও থাকুক পতত্রীর মতো নীলাকাশে স্বচ্ছন্দসন্তরণের দুইটা ডানা।তীব্র ভালবাসার ভেতরে থাকে দ্বেষণা এবং প্রচন্ড দখলদারিত্ব নেশা।চায় ভালবাসাকে বন্ধী করতে হাতের মুঠোয়।

" আমারি চাঁদ আমার থাকুক
কেউ যেন না দেখে তাকে "



বিহঙ্গ কি চায়?
সে চেয়েছে প্রগাঢ় পাইনের ঘনঘোরবন, বেগুনি জারুল , গোলাপী শিরিষ,ঘাসের হলুদসাদা ফুল, দানা খুঁটে তোলা খোলা মাঠ, বটপাকুড়ের ফল, ছোট ঘাসফুলের সাথে মিতালিসখ্যতা।

" পাখী পাঁকা পেপে খায়"
পেপে খায়।খায় মৌসুমী ফল।উড়ে উড়ে,ঘুরে ঘুরে। পোকামাকড়।

খাঁচার ভেতরে তুমি তাকে দেবে ভিজেছোলা, লালমরিচমাখা ভাত।
সে ছোলা চায়না, ভাত চায়না।চায় মুক্ত আকাশ আর সবুজপাতার আড়ালের আপননিবাস।সারাদিন উড়ে উড়ে
মুখে তুলে আনে খড়কুটোলতাগুল্ম। নিজের বাসা নিজেই বানায়।
চায়না সোনারপিঞ্জরের নির্বাসন।তার পাখসাটে সারাক্ষণ বাজে আর্তনাদের শব্দ।

শূন্যনীলিমার পাখী।
সবুজপাতার পাখী
বৃক্ষশাখার পাখী।
ঘাসফুলের সাথে কথাবলা পাখী।

পাখী হতে চাওয়া মানুষ, অসফল আক্রোশে পাখীটাকেই খাঁচায় পুরতে চায় অসীম আগ্রহ ও যত্নে।
খাঁচার যত্নে কবে ভুলেছে মুক্তবাতাসের বিহঙ্গ?

" একদিন পাখী উড়ে যাবে যে আকাশে
ফিরবেনা সেতো আর....................................."
ঠোকরে ঠোকরে একদিন ঠিকই ভেঙ্গে দেবে সোনালীশিকল।আকাশ ও বৃক্ষের পাখী কি করে শিকলের হবে?

পড়ে থাকবে শূন্য পিঞ্জর ,দানাপানির শূন্য বাটি, খসে পড়া ছিন্নপালকগুলো,
মানুষের শেখানো বুলি আর ডানা ঝাপটানো শব্দের রেশ।


--------------------------------------------------------------------------------------------------





.

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন