শুক্রবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৪

ল্যান্ডস্কেপ



উজ্জ্বলঅনিন্দ্য সব ল্যান্ডস্কেপ থাকে শুধু স্বপ্নের ভেতরে
তুমি জানো
তোমার দেয়ালে  পুরোটা ঝুলবে
নাকি
এক খন্ডাংশ ।


শূককীট থেকে বেরিয়েই উড়ে যাচ্ছে প্রজাপতি
গাছের বাকলে ফেলে যাচ্ছে কালো তার ছায়া
এবং
একটি খোলস।
ডানায় কোন রঙ স্থির হবে সেটা অন্য প্রশ্ন ;
আলাদা।
কিন্তু
এইযে হুট করে খুলে দিলে রোদের বোতাম
ছায়াটা কোথায় রইলো ?
ছায়ার পেছনে ছায়া
তার পেছনে------------------------------------


কাসকেটে জমিয়ে রেখেছি ধুলোছাই।





--------------------------------------------------------------------------------------------------------------

বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০১৪

লোডশেডিংয়ের রাত



হৃৎপিন্ডে মাইডাসের স্পর্শ চাইনা।
জীবন্ত  হৃদয় কেন হবে শুধুমাত্র কঠিন এক স্বর্ণপিন্ড !
হৃদ্‌স্পন্দনের প্রতিটি শব্দ শুনতে চাই
আর
ছুঁয়ে দেখতে চাই
ছুরিকাঘাতে গড়িয়ে পড়া রক্তধারার উষ্ণতাটুকু।


জানালার দু'পাশের দৃশ্যাবলি আর একখন্ড আকাশ
সাথে নিয়ে, ছুটে যাচ্ছে দ্রুতগামী ট্রেন।
ক্রমশঃ মিলিয়ে যায় তীব্র হুইসেলের শব্দ ;
পেছনে পড়ে থাকে
পরিত্যক্ত প্ল্যাটফরমের দীর্ঘশ্বাস।

আজ সারাদিন খুব ঘুম ঘুম নির্জনতা
মেঘের মতো ছায়া ফেলেছিল।
বুকের ভেতরে খুব ছড়ানো ছিল ,ভিজে হাওয়ার কুয়াশা।
নীলখাতার কোথায়  কতোটা হয়ে গেছে আরো গাঢ়নীল
দেখতে চাইনি,
জানি
যতই খন্ডিত করা হোক আকাশ
নীল সেই নীলইতো ; প্রখর অথবা ম্লান।

এক ঘর অন্ধকারের গ্রাসের ভেতর
বাতাসের  প্রবল হতাশ্বাস বয়ে যায়
টুং টাং বেজে ওঠে আলো নেভা ঝাড়বাতি;

আলো জ্বলবে কি জ্বলবেনা
ভাবতে
ভাবতেই মনে পড়লো
আজ আবার এক তমসাঘেরা লোডশেডিংয়ের রাত।







শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৪

এতোটা বিষাদ ছিল



এতোটা বিষাদ মেখে  না নিলে কোনদিনও জানা হতোনা
সব বিষন্নবিষ মুছে ফেলা যায় পাখির পালকে।

কোন মাঝরাতের ভয়াল কোলাহলে ঘুম ভেঙ্গে গেলে
রাতজাগা পাখিটাকে খুঁজি ;
কান পেতে থাকি পাখসাটে।প্রিয় পাখি।

আজ আবার আকাশের মন ভার হলো খুব
তবু বৃষ্টি হলোনা ;
নিমের চিকন পাতায়, ডালে
 একরাশ ঝিরিঝিরি অন্ধকার নেমে আসে।
ছাদের আলসেয় একাকি বসে থাকা কাক
'খা, খা' চিৎকারে জানিয়ে দিল
তারও প্রিয় নয়  অবেলার এই বিষাদআঁধার ।

এতোটা বিষাদে ডুবে না গেলে কোনদিনও জানা হতোনা
সমুদ্রস্নানে সেরে যায় হাজার অসুখ ;
দেখা হতোনা--তরঙ্গচূড়ায় দুঃখগুলো কেমন সোনালি হয়ে ওঠে,
স্রোতে মেশা এমন বেলির সুবাস ----চেনা হতোনা।

এতোটা বিষাদ ছিল বলেই
আবার ফিরে আসা ;
প্রিয় পাখি এবং সমুদ্র---------------------------------------------







-------------------------------------------------------------------------------------------

মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০১৪

আকাশ জুড়ে শুনিনু



            চাঁদ উপুড় ঢেলে দিল  মায়াবী জ্যোৎস্নার অঝোর ধারা।প্রবলসমুদ্রের ঢেঊয়ের মতো সবুজ চাঁদনীর লহর খেলে যায় নুনপোড়া ক্ষত ভিজিয়ে দিয়ে।তাই হোক। সমস্ত নুন সাগরের নুনে মিশে ঝরে যাক।

   হতাশ্বাসের নীল হুতাশনে চারপাশ পুড়িয়ে ফেলার আগেই নিজের জন্য তৈরি করে ফেলতে হয় একটি চাবুক।যেন নোনাধরা দেয়ালে  খুঁজতে নাহয় কোন হারিয়ে যাওয়া প্রতিচ্ছবি।কেবল নাম হয়ে বেঁচে থাকা কোন মুখের আদল।বাতাসে ছড়িয়ে দেওয়া আর্তনাদগুলো বুমেরাং হয়ে বারবারইতো ফিরে এসেছে।আর বাতাসের মীড়ে মীড়ে তৈরি করেছে হাহাকারের নবতর শব্দাবলি।কতোবার............................................................

                  দূরাগত জাহাজের ভেঁপু বেজে ওঠার  আগেই কেন যে এক অর্থহীন ডুবসাঁতারে মাঝসমুদ্রে পৌঁছে যাওয়া ! সেইতো সৈকতেই ফিরে আসতে হয়। কোন মানে হয়না ।অথবা এ এক প্রতিযোগিতা নিজের ছায়ার সাথে। ছায়াকে অতিক্রম  করে যাবার  বোকাদুঃসাহসিকতার এক আবেগতাড়িত লোভ।শেষপর্যন্ত ভেংচি কেটে ছায়াটাই এগিয়ে যায়। যা স্বতসিদ্ধ। স্বাভাবিক। ছায়াকে অতিক্রম করা যায়না।অনুসরণ করা যায় মাত্র।ছায়াটাও সত্যি। আপন অস্তিত্বের মতোই।আমরা ভুলে থাকি । আমরাই..........................................


          এইযে সমুদ্র আর আকাশের মাঝখানের ফাঁকের হিসেবটা, দুরত্বের উদাহরণ হয়ে আছে  যুগ যুগ ধরে --এ এক মিথ্যে উদাহরণ।আকাশ আর সমুদ্রের মতো পরস্পরের এত কাছাকাছি , পরস্পরের এত আপন আর কিছুর তুলনা চলেনা। সারাক্ষণ মুখোমুখি তাকিয়ে থাকা।আর কে পারে এমন!সময়ের পরিক্রমা শেষ হয়ে গেলে আকাশ তার সূর্য আর চাঁদকে পরম নিশ্চিন্তে রেখে দেয় সাগরের নিরাপদ কোলে।সাগর যেমন তার সব জলকণা তুলে রাখে আকাশের মেঘের ভেলায়।সবকিছু এভাবেই । সব। সব।অথচ আমরা দেখছি অন্যরকম। দেখছি দুরত্ব। খুঁজছি বিরহ। তাদের অন্তহীন মিলনের গান সহজে ধরা দেয়না আমাদের কানে।

            জলের সিঁড়ি ভেঙ্গে ভেঙ্গে  তলিয়ে যাচ্ছে মাছ। আবার ভাসছে কানকোর ঝাপটায় নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের স্বভাবগত প্রয়োজনীয়তায়।জলইতো মাছের একমাত্র বিচরণক্ষেত্র। কখনো সমতলে ,কখনো অতলে।আবার জলের বিলাসও  মাছইতো।
   কোন কোন গ্রন্থিবন্ধন এমনি----জল আর মাছের মতো । আকাশ আর সমুদ্রের মতো। এমনি কাছে অথবা দূরে।

" আকাশ জুড়ে শুনিনু ওই বাজে        তোমারি নাম----------"

কার নাম? কার?

সে শুধু সমুদ্রের।






----------------------------------------------------------------------------------------------------------------

     

বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০১৪

ইউফোরিয়া



              শেষরাতে যখন চন্দনবনের পাপিয়া ডেকে ওঠে , 'পিউ কাঁহা, পিউ কাঁহা ' বোলে ;এক অদ্ভুত- অলৌকিক সৌরভে প্লাবিত হয়ে যায় এই ঘর।মনে হয় যেন হাজার বছর এই সুগন্ধটুকুরই অপেক্ষায় ছিলাম।সারা ঘর আঁতিপাঁতি করে খুঁজতে থাকি সেই মহার্ঘ্য ফুলদানিটি , যেখানে সাজিয়ে রাখা যায় এই বহুমূল্য পারফিউম ; যা প্রবাহিত হচ্ছে শরীরের রন্দ্রে রন্দ্রে যুগপৎ আগুন এবং জলের মতো।
              এক অদ্ভুত বিভঙ্গে নেচে যায় দোলনাঘরের পরী।ঠোঁটের কাছে ধরে রাখা পানপাত্রে মোহময় অমৃত।

                   মন খুব ভাল আজ ;সবুজ ঘাসের বুকে নেচে যাওয়া আরো প্রগাঢ়সবুজ ফড়িংয়ের মতো ।

একটি বহুবর্ণ প্রজাপতি উড়ে যেতে যেতে হাতের তালুতে এঁকে গেল পিতলরং শুভেচ্ছাবাণি। মন খুব ভাল।

রংধনুর ছবি



রংধনুর গায়ে হাত রেখে
আবার জুড়ে দিচ্ছি সূর্য  বিচ্ছুরণের আলো
 এবং জলকণাগুলো।

ধনুকের ছিলা থেকে ছিটকে গিয়েছিল  যে রঙ,
ছড়িয়ে গিয়েছিল মেঘের আনাচকানাচে ;
আবার ফিরছে তারা বর্ণচ্ছটার আলোকিত উৎসবে।

মানুষ জল ভালবাসে ,ভিন্নার্থে তরল।
এই যে গ্লাসে গ্লাসে ঢালা হচ্ছে রক্তাক্ত পানীয়
এবং আইসকিউব ;
কারো কারো চুমুকের সাথে ভেসে উঠবে স্বদন্ত হাঙ্গরের ছবি
তবু
ভয় চেপে রেখে নিঃশেষে পান করে নেবে সবটুকু ফেনিল অমৃত।


মানুষ জল ভালবাসে
তবু
জলের গন্ধ চেনেনা হরিণের মতো। বৃথাই
রংধনুর প্রতিচ্ছবি খুঁজে ঝর্ণার স্রোতে।



-------------------------------------------------------------------