বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৪

ছবিটা নিখুঁত হয়না




আবারো সেই হিমগন্ধের বিভীষিকা ,নিঃশ্বাস আগলে রাখা  কালো হাত।

মেঘের প্যাস্টেলে আঁকা  বহুবর্ণ ছবিগুলো উলটে পালটে দিয়ে
ছুটে যাচ্ছে উন্মাতাল এক মৃত্যুরং ঘোড়া ;
কিংকর্তব্যবিমূঢ় লাগাম-------------------------------------



সময় কখনো ইজেরের কোমরে বাঁধা ইলাস্টিক ফিতে নয় যে
চাইলেই --- দীর্ঘ অথবা হ্রস্ব হবে ।
তবু
তীব্র জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে কখনো বা ভেসে যাচ্ছে সময়ের কাঁটা ।


হতাশ্বাসের বিষবাষ্পে ক্রমশ  বিবর্ণ  হচ্ছে সবুজ পত্রপুষ্পশাখা ।


হয়ত নিখুঁত  আকাশের ছবি চাইছে এক বিফল চিত্রকর।














মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৪

শেষ বিন্দুতে



শব্দতরঙ্গে কম্পন জাগে।
দূর দিগন্তরেখায় অচেনা এক বর্ণআলেখ্য----------------- 
কুয়াশা ভেঙ্গে অঙ্কুরিত হয়ে ওঠে একটা ছায়া অথবা শব্দ ।
কোথাও পাতার বাঁশি বেজে ওঠে ;
ধ্রুপদী সুরের মীড়ে মিশে আছে
এক অতলান্ত সবুজ ঘ্রাণের মতো নীরবতা ;
স্রোতস্বিনীঢেউয়ের মতো বিলম্বিত এক লয় গড়িয়ে যাচ্ছে
মহাসমুদ্রের দিকে ।


তুমি নুপুর নও ।
নদী নও।
রং-তুলিও নও ।
তবু বাতাসে পেন্সিল ঘুরিয়ে এঁকে নিচ্ছো এক শূন্যবলয়
সেই বৃত্তের ভেতরে আরেক বৃত্ত ;
এভাবে একটা বিন্দুতেই শেষ।এবং

স্থির।









-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------


সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৪

দাগ



থাক্‌ ।

এই দাগ।বোতল উপচে পড়া তরল আনন্দচিহ্ন ।
বাতাসে মিলিয়ে গেলে ঘ্রাণ
তলানিতে  স্মৃতিঅভিজ্ঞান  ফুটে থাক
আরো কিছুটা সময় ।


ফুল টেনে নিচ্ছে প্রাণপণ  গন্ধ  , বাতাসের ।
মলয়ার অনুতে অনুতে ভিন্ন সুর বেজে গেলে
রঙ বদলে যায় বারবার
তা কি জানে বোকাপুষ্প?


রঙ পেন্সিল হাতে দাঁড়িয়েছি নোনাদেয়ালের পাশে।







=============================================

শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৪

সারভাইভ্যাল অব দ্য ফিটেস্ট



                     এক প্রচন্ড ঝড় উঠলো। ধুলোর।যেখানে যা কিছু ছিল স্থির ,  সব ছিটকে সরে গেল এখান থেকে ওখানে। লন্ডভন্ড।
            ল্যাম্পপোস্টের গায়ে লেপ্টে থাকা মৃত প্রজাপতির চোখে তখনো  সরব হয়ে ছিল এক বিস্মিততীব্র জিজ্ঞাসা--আলোর কাছাকাছি গেলেই পুড়তে হবে কেন! কিছুক্ষণের ভেতরই মৃতমাংস সন্ধানী পিঁপড়ারা ভীড় করবে এখানে ।আত্মাহুতি দেবে আরো কিছু ক্ষুদ্রকায় প্রাণ। প্রখর তাপে পতঙ্গ পুড়ে। পুড়ে খাদ্যসন্ধানী পিপীলিকা এবং  যে তীব্রতাপ পুড়ায় পতঙ্গ,  সেই খরদহন কখনো কখনো  মানুষের নরম হাতগুলোতে ছড়িয়ে দেয় ফোসকার দাগ। আজীবনের।
    এই যে মানুষ , পতঙ্গ অথবা পিঁপড়া যারা সন্ধান করে আলো অথবা মাংসের তাদের পরিণতিগুলো, একই সুতোয় বাঁধা। অবসান।
           তার চাইতে   এই প্রখর উত্তাপের উৎস থেকে দূরেই থাক্‌  ক্ষীণজীবী কীট-পতঙ্গ এবং সমস্ত কোমলতাগুলো। আগুনের কাছাকাছি  থাকুক কেবল অগ্নিপ্রতিরোধক ধাতব কাঠিন্য।' সারভাইভ্যাল  অব দ্য ফিটেস্ট'।

     
      শন শন দমকা হাওয়ায় ইতিউতি উড়ে যাচ্ছে  শুকনো জীর্ণ ডালপালা , পাতা , খড়কুটো।
বাতাসের দুর্ণিবার আলোড়নে শূন্যে উঠে যাওয়া ঝরা পাতাগুলো পাখি নয়--এই কথাটা কখনো ভুলে যায়   আত্মমগ্নতার গভীরে ডুবে যাওয়া কিছু মানুষ।ধুসর বর্ণের বিচ্ছিন্ন ঘুর্ণিতে তারা ভোগতে থাকে উড়ে যাওয়া ডানাবিভ্রমে। অহেতুক।
  ঝড় থেমে গেলে এসব ঝরে পড়া ছাইপাশ  আবার নেমে আসবে মাটির মাধ্যাকর্ষনের টানে।জায়গা হবে ডাস্টবিনে। মিউনিসিপ্যালিটির আবর্জনার গাড়িতে ।
     
               প্রবলবর্ষনের তোড়ে ছাদ উপচে পড়া অবিরাম জলধারাওতো মাঝে মাঝে ঝর্ণার বিভ্রম তৈরি করে ফেলে এক নিমেষে ।পাহাড়, ঝর্ণা এবং নদী পিয়াসী মানুষের কাছে এও এক তৃপ্তিদায়ক সান্ত্বনা। উঠোনে মিছেমিছি তৈরি হওয়া এক নদীতে মানুষ ভাসিয়ে দেয় না না রঙের কাগজের নৌকা আর কপোলকল্পনায় ভাবে    ' সপ্তডিঙ্গা মধুকর দিয়েছি ভাসায়ে '।






                

বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০১৪

অশ্রুত সুর






তোমার আয়না অথবা জলবিম্বে নক্ষত্রের কোলাহল ;

হাতের তালু থেকে এক নদী বিষাদ গড়াতে গড়াতে
মিশে গেছে সমুদ্রের নুনে।


রাত দ্বিপ্রহরের ঘন্টায় বেজে ওঠে নীলভায়োলীন
নীরবতার বাদামী খাম ছিঁড়ে
ইথারে ছড়িয়ে পড়ে
কালোগোলাপের তমসারণিত পাপড়িগুলো।
শব্দ ভাঙ্গছে
ভাঙ্গতে
ভাঙ্গতে
খুঁজে ফিরছে নতুন কোন বাক্যগ্রন্থি।

তার চেয়ে একটা ঝড় উঠুক প্রবল সামুদ্রিক
একখন্ড সমুদ্রই নাহয় ছিটকে উঠুক
ছড়িয়ে পড়ুক আকাশের পিঙ্গল অলিন্দে ।
তরঙ্গচূড়ার উত্তুঙ্গে কেঁপে ওঠে সশব্দ বর্ণমালা
উড়ুক্কু মাছের ঠোঁটে ঠোঁটে তারা সব
পৌঁছে যাবে মেঘের কানে কানে ; গোপন চিঠির মতো।


চাঁদের পতাকাতলে বেজে গেল --- অশ্রুত সানাই ।








--------------------------------------------------------------------------------------