শনিবার, ৯ অক্টোবর, ২০১০

কলকল্লোল কোলাহলে

ইদানীং তোমাকেই ভয় পাচ্ছি-----নির্জনতা।
অন্ধকার ঘন হয়ে এলে রাতের কফিন থেকে ড্রাকুলার মতো উঠে আসো;
প্রাচীন-সমাধিতে ডানা ঝাপটায় রক্তভুক বাদুড়ের পাল।

কি অনায়াসে তুলে আনো
যত্রতত্র হেলায় ফেলে রাখা বিস্মৃতির প্রখর হলুদ খামগুলো,
ছেঁড়াখোঁড়া-অগোছালো অংক না মিলা হিসেবের খাতা।
চাইনা।
ধুলোর আবরণে--বিস্মরণের ছাইয়ের নীচেই ওসব মানায়।
জনপদে মানায়না শবের মিছিল।

যেতে চাই কোলাহলে।ঊর্মিমালায়।
ডেকে যাচ্ছে নীল ঢেউ--মাঝ সমুদ্র ----------------
আমি খুঁজছি এক অলৌকিক-সাম্পান---ডুবুরির পোষাক;
এই উন্মত্ত-মাতাল প্রচন্ড-তরঙ্গের গভীর-গভীর-গভীরতম নিবিড়তায়
পৌঁছানোর সমস্ত আয়োজন--সাজ-সরঞ্জাম।




অতলের শিথানে হাত রেখে স্পর্শ করি কলকল্লোল জলের পৃথিবী।

সোমবার, ৪ অক্টোবর, ২০১০

ট্রেন

কু-উ-উ-উ-ঝিক-ঝিক-ঝিক---কু-উ-উ-ঝিক-ঝিক-----
চলে যাচ্ছি----চলে যাচ্ছি-----চলে যাচ্ছি-----------
ছুটে চলেছে বিশাল ড্রাগন মুখে আগুনের ধোঁয়া ।আস্তে আস্তে মিলিয়ে যাচ্ছে স্টেশন----চেনা শহরের শেষ চিহ্ন।
দু'পাশের ধানক্ষেত --ক্ষেতে কাজ করা চাষী---মাঠে চরা গরুর পাল--বাঁশী-বাজানো রাখাল-বালক----খাল-বিল-----নদী-
মাছের জাল আটকে রাখা বাঁশের মাচান---দূরগ্রাম---হাটুরে মানুষ; কত দ্রুত পিছনে চলে যাচ্ছে সব---আড়াল হয়ে যাচ্ছে।

জানালা-খোলা কামরার ভেতরে জমছে কুয়াশার মতো ধুলো।জমছে স্মৃতি।শৈশব।ছুটি।ট্রেন। মামাবাড়ী।
-----" মামাবাড়ির পদ্মপুকুর গলায় গলায় জল
এপার হতে ওপার গিয়ে নাচে ঢেউয়ের দল।"

কু-উ-উ-ঝিক-ঝিক--কু-উ--উ--ঝিক--ঝিক----
চা-বাগান--পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে ফুটে থাকা নাম না জানা ফুলের নানারঙ ---অচেনা লোকালয়--এসব দুই চোখে মেখে নিয়ে আমিও ফিরে যাচ্ছি বার বার আমার শৈশবে-কৈশোরে।স্মৃতি থেকে খুঁড়ে তুলছি সেইসব রূপালী-বিষাদ যারা চোরা-জ্যোৎস্নার আড়ালে লুকোনো ছিল।আর আগুনের স্তব গাইতে গাইতে একদিন ছায়াপথে মিলিয়ে গিয়েছিল যে নীলকন্ঠ পাখীর ঝাঁক ,আজ আবার ফিরে এলো ডানায় আগুন ছড়াতে ছড়াতে।


আজ আবার মনে পড়ে গেল এমনি এক জংশনে আমি উঠে পড়েছিলাম একটি ভুল গাড়ীতে।টিকিট-চেকার বললো--'এ গাড়ীতো আপনার নয়,--এখানেই নেমে যান'।
সকলেরই কি থাকে অচেনা-মাঝপথে নেমে যাবার সাহস? আমার ছিলনা।